Park

লোভাছড়া

Overview

লোভাছড়া ভ্রমণের প্রয়োজনীয় তথ্যের জন্য আমাদের পেইজের পোস্ট গুলো আপনার সহায়ক হবে...

Tags

  • Tour Agency
  • Tourist Information Center

Description

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপূর্ব লীলাভূমি দু’টি পাতা একটি কুড়ির দেশ সিলেট।পাহাড়ঘেরা অপূর্ব দর্শনীয় সবুজের নগর সিলেট প্রাচীনকাল থেকেই পর্যটকদের আকর্ষন করে আসছে। শুধু এদেশের পর্যটক নন, সবুজের মাঝে হারিয়ে যেতে বিদেশী পর্যটকরাও ছুটে আসেন সিলেটে। সিলেটের বেশ কিছু ঐতিহ্যবাহী পর্যটন স্থান ছাড়াও বর্তমান সময়ে পর্যটক আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পিপাসুরা নতুন করে খুঁজে বের করছেন প্রকৃতির আরো সৃষ্টিকে।সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার একেবারে বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব সীমান্ত এলাকায় খাসিয়া-জৈন্তা পাহাড়ের পাদদেশে প্রায় ১৮৩৯ একর জমির উপর গড়ে ওঠে লোভাছড়া চা-বাগান।পাহাড়ের কোল জুড়ে গাছপালার সবুজ বর্ণিল রঙয়ে আচ্ছাদিত হয়ে আছে লোভাছড়া চা-বাগান। বাগানের শুরু থেকে মাটির রাস্তা ধরে যতদূর এগুনো যায় চোখে পড়ে ছোট-বড় নানা ধরনের গাছপালা। চা-বাগানের মাঝে গাছগুলো সারি-সারিভাবে সাজানো। এই চা-বাগানের সৌন্দর্য্যের প্রতি মুগ্ধতা অন্যদিকে রয়েছে তার প্রাকৃিতক ঐশ্বর্যের প্রতি লালসা। লোভাছড়ার পাশ দিয়ে ভারত সীমান্তে হারিয়ে গেছে ‘নুনগাঙ’। ‘নুনগাঙ’ প্রায় নদীর মত হলেও এটি আসলে ঘোলা পানির একটি খাল যা লোভাছড়া নদী থেকে উৎপন্ন হয়েছে। খালের উপর বেশ পুরনো তবে এখনো মজবুত স্টীলের তৈরী একটি ব্রীজ রয়েছে, যার উপরে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ-ভারত উভয় সীমান্তের পাহাড়ঘেরা আবছা ছবি চমৎকারভাবে ভেসে ওঠে। বাগানের সবচাইতে উঁচু বাংলো থেকে শীতের দিনে দেখা যাবে স্বচ্ছ জলের লোভাছড়া নদী। এই বাগানেই কিছুদিন আগে একটি ব্ল্যাক প্যানথার ধরা পড়ে, যেটি শুধুমাত্র আফ্রিকা মহাদেশে পাওয়া যায়। এছাড়াও স্থানীয়রা বলেন খুব সকালে হরিণ, খরগোশ, আর বন মোরগ চোখে পড়ে। আর রাতের আঁধারে শোনা যায় বাঘের গর্জন। বলা চলে- লোভাছড়া চা-বাগান বন্যপ্রাণীদেরও অভয়াশ্রম। বাগান কর্তৃপক্ষের একটি বিশাল আকৃতির পোষা হাতি রয়েছে, যেটি সবসময় বাগানে অবাধ চলাফেরা করে। লোভাছড়ায় পর্যটকের জন্য থাকার কোন সু-ব্যবস্থা না থাকলেও বাগান মালিক কর্তৃপক্ষের জন্য রয়েছে ৪টি বাংলো। বাংলোগুলোর বাহ্যিক দৃশ্যগুলোও বেশ নান্দনিক। বাংলোর কাছাকাছি জায়গায় রয়েছে কয়েকটি কফি গাছ। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকবাহিনীর তান্ডবে এই বাগানের নিজস্ব ফ্যাক্টরী ধ্বংস হয়ে যায়। তাই এখানে গেলে কোন চা প্রক্রিয়াজাতকরণ পদ্ধতি দেখা যাবে না। লোভাছড়া যেতে হলে সিলেট শহরের কদমতলী বাস স্ট্যান্ড থেকে প্রথমে কানাইঘাট যেতে হবে। ভাড়া নেবে জনপ্রতি ৪৫-৫০ টাকা। তারপর কানাইঘাট বাজার থেকে নৌকাঘাটে গিয়ে সুরমা নদীর পথ ধরে লোভাছড়ার উদ্দেশ্যে যেতে হবে নৌকায় করে। নৌকা ভাড়া নেবে জনপ্রতি ২০ টাকার মতো, সবমিলিয়ে সময় লাগবে প্রায় সাড়ে তিন ঘন্টা। পুরোটাই সবুজময় লোভাছড়া চা-বাগান বর্ষায় এক অপূর্ব রূপ ধারণ করে। বৃষ্টিদিনে লোভাছড়ার সবুজ বুকে ঝাঁপ দেয়া কিংবা শীতে এপাশ-ওপাশ কুয়াশাময় পাহাড় আর বাগানে রোদের খেলা যেকোনো পর্যটকের হৃদয় জয় করে নেবে।

#দরকারি তথ্য

লোভা নদী আর লোভাছড়া চা-বাগান যেতে হলে সিলেট শহর থেকে যাত্রা শুরু করতে হবে। সে ক্ষেত্রে গন্তব্য হবে কানাইঘাট। আমরা গিয়েছিলাম ঘুরপথে। সহজ পথ হচ্ছে দরবস্ত-চতুল হয়ে কানাইঘাট সদর। এ ছাড়া গাজী বোরহানউদ্দিন সড়ক ধরে গাছবাড়ি হয়েও কানাইঘাট সদর পৌঁছানো যায়। যেভাবেই যান লোভা নদীতে তো বেড়াবেনই, দেখবেন লোভাছড়া চা-বাগানও। সারা বছরই এখানে বেড়ানো যায়। তবু বর্ষায় লোভা নদীর মজাই আলাদা। আর বৃষ্টির দিন হলে তো কথাই নেই। সে জন্য অক্টোবর পর্যন্ত লোভা নদী ভ্রমণ অসাধারণ। লোভা নদী আর লোভাছড়া চা-বাগান বেড়াতে হলে এক দিনই যথেষ্ট। সে জন্য সিলেট শহর থেকে আপনাকে সাতসকালে রওনা হতে হবে। এখানে সবুজ পাহাড় আর লোভা নদীর অসাধারণ স্বচ্ছ পানি একবার দেখলে বারবার যেতে ইচ্ছে করবে। সঙ্গে বাড়তি পাওনা লোভাছড়া চা-বাগানের বহু পুরোনো ঝুলন্ত সেতুর সঙ্গে এখানকার খাসিয়া গ্রাম। বাস, মাইক্রোবাস বা সিএনজিচালিত অটোরিকশায় যেতে পারেন কানাইঘাট। তারপর নৌকায় ঘুরে বেড়াবেন মনোরম লোভায়। তারপর চা-বাগান হয়ে ফিরতি পথ ধরা! কানাইঘাট বাজার ছাড়া খাবারের ভালো ব্যবস্থা নেই। তাই সঙ্গে পর্যাপ্ত খাবার রাখা ভালো।

Location

Rate & Write Reviews